https://www.somoyerdarpan.com/

2484

sports

স্পোর্টস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ঘোষণা

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট ২০২৪ ১৪:০৪

উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে স্বতন্ত্রভাবে স্পোর্টস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এমন নজির আগে কখনো দেখা যায়নি। অত্যাধুনিক অবকাঠামো সুবিধাসহ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) বেশ কিছু শাখা থাকলেও নানান সীমাবদ্ধতা আর নিয়মের বেড়াজালে বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই সুবিধাবঞ্চিত। বিষয়টা মাথায় রেখেই এবার খেলোয়াড়দের সামগ্রিক উন্নয়নে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন স্বতন্ত্র একটি স্পোর্টস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। রোববার সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুগান্তকারী এ ঘোষণা দেন তিনি।

কয়েক দিন আগেই প্যারিসে শেষ হয়েছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত অলিম্পিক গেমস। এই গেমসে অংশ নেয় বাংলাদেশের পাঁচ ক্রীড়াবিদ। দক্ষতার অভাবে শুরুতেই ঝরে পড়েন তারা। সেই ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু করে অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নেই কিছু। শুধু অলিম্পিক কেন, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমসেও সাফল্যের জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় থাকতে হয়। কেননা বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের ওই সামর্থ্য নেই।

তাই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সাফল্য পাওয়ার জন্য দেশীয় ক্রীড়াবিদদের সামগ্রিক উন্নয়নে শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। কিন্তু বেশিরভাগ ক্রীড়া ফেডারেশন বা সংস্থায় তা করার জন্য নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো। এ কারণেই ক্রীড়া কৌশল ও নেতৃত্ব গুণের উন্নয়ন তথা খেলোয়াড়দের দক্ষতা বৃদ্ধিতে স্পোর্টস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই প্রয়োজন মেটানোর পথেই হাঁটছেন আসিফ। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ স্লোগানে প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট’ নির্মাণের ঘোষণা দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। 

উপস্থিত সাংবাদিকদের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ক্রীড়াক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উচ্চ ফলাফল অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খ্যাতনামা স্পোর্টস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কার্যকর কোলাবোরেশনের মাধ্যমে বিশেষায়িত স্পোর্টস সেবা ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবে।’

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বরাবরই বৈজ্ঞানিক সংযুক্তির বিষয়টি উপেক্ষিত। কাক্ষিত সাফল্য অর্জনে খেলোয়াড়দের মানসিক সুস্থতার ব্যাপারটিকেও কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। অথচ অন্যরা এখন এই দিকটাতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশও সেই পথে পা বাড়াচ্ছে তরুণদের নেতৃত্বে।

শুধু প্রযুক্তিই নয়, ক্রীড়াঙ্গনে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ লোকেরও অভাব। স্পোর্টস ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ করতে চান আসিফ। লক্ষ্য পূরণে দেশ এবং দেশের বাইরের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে চান তিনি। দ্রুততম সময়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বদ্ধপরিকর বলেও জানিয়েছেন।

ক্রীড়াবিজ্ঞানের ধারণাকল্প প্রদানে দেশে বিকেএসপির বেশ কিছু শাখা প্রচলিত থাকলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। প্রতিষ্ঠানটির বাইরে যেসব ক্রীড়াবিদ আছেন, তারা চাইলেও ওই সুবিধাগুলো নিতে পারেন না। নানান প্রতিবন্ধকতা আছে।

স্বতন্ত্রভাবে নতুন স্পোর্টস ইনস্টিটিউট করার কথা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ,

‘এটি একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হবে। আমরা দেখব যে অবকাঠামো আছে তার মধ্যে করা যায় কি না। না হলে ভবন নির্মাণের মাধ্যমে এটা আমরা করব।’ 

স্পোর্টস ইনস্টিটিউটে কারা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন, সে ব্যাপারে আপাতত সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। তবে ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার কাছে স্পোর্টস ইনস্টিটিউট হবে বিশেষায়িত স্থান, যেটি হবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া এবং লক্ষ্য অর্জনের সহায়ক মাধ্যম। এই ইনস্টিটিউটে ভর্তির ব্যাপারে কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন আসিফ। প্রশিক্ষণ পরিচালনায় প্রাথমিকভাবে দেশে ট্রেইনার না পাওয়া গেলে বিদেশ থেকে দক্ষ ট্রেইনার এনে কার্যক্রম শুরুর বিষয়টিও পরিষ্কার করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।